যারা পরীক্ষায় সব থেকে ভাল ফলাফল করে সামনের দিকে অবস্থান করে তাদের আমরা ভাল ছাত্র হিসেবে ধরে থাকি।
একজন ভাল ছাত্রের কি কি গুণ থাকা লাগে? মনযোগী হওয়া, সময় মেনে চলা, দায়িত্ব গ্রহণ করা, দায়িত্ব পালন করা, নিয়মিত পড়াশোনা করা, একটু স্বার্থপর হওয়া আরও কত কি! এসব গুণ জন্ম থেকে হয় না। এসব গুণ তৈরি হয়। এসব গুণ তৈরির পেছনে থাকে কিছু নিবেদিত প্রাণ মানুষের অবদান। প্রতিটা ভাল ছাত্র কোন দিনও নিজেকে ভাল ছাত্র বলে স্বীকার করে না। কিন্তু যখন তাদের সেই সোনার মানুষ গুলোর কথা মনে পড়ে বা তাদের কথা ওঠে তারা ঠিকই তাদের অবদানের কথা বলে। তারা জীবনের কখন কিভাবে তাদের জীবন টাকে পাল্টে দিয়েছিল সব বলে এবং সব শেষে এও বলে তার কারণেই আজ আমি এ অবস্থানে পৌছেছি।
ভাল ছাত্রদের সবচেয়ে বড় ব্যাপারটি হল তারা সব ব্যাপারে নিয়মিত। খুব কম ক্ষেত্রে জড়িত থাকে। পড়ার ব্যাপারে তারা খুব সেনসিটিভ। পড়ার সময় দুনিয়া উল্টে যাচ্ছে কি সোজা হচ্ছে সেদিকে তাদের কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। নিজের পড়াটা ঠিকি পড়ে নেয় সময় করে।
পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করতে হবে এ বিষয়ে তার উপর কয়েক দিক থেকে চাপ থাকে - পরিবারের থেকে, বন্ধুদের ভাল ফলাফল দেখে সৃষ্ট ঈর্ষা থেকে, ভাল ফলাফল করি আমি এমন অহংকার বোধ থেকে, ভবিষ্যতে ডাক্তার/ ইঞ্জিনিয়ার হতে গেলে পড়তে হবে, দিনের পর দিন মেনে চলা অভ্যাস থেকে। কো না কোন দিক থেকে যায় এই পড়াশুনার ধারাটা ধরে রাখতে। নিয়মিত দিনের পর দিন এভাকে চলতে গিয়ে নানা ভাবে মস্তিক পড়ায় অভিযোজিত হয়ে যায়। ফলাফল হিসেবে কম মনযোগী কোন ছাত্রের থেকে খুব কম সময়ে তাদের পড়া আত্মস্ত হয়। যাকে আমরা মিষ্টি করে মেধাবী বলে থাকি। তাদের প্রতি ক্লাশে নোট তোলার বাতিক থাকে। এতে করে লেখার সৌন্দর্য দিনদিন বৃদ্ধি পেতে থাকে।
ভাল ছাত্ররা চিটার হয়। ফলাফল ধরে রাখতে সব রকম পথ অবলম্বন করে। সব রকম পথের মাঝে অসাধু পথও থাকে। তবে তাদের এই চিটিংকে অনেকে ধরতে পারলেও অপরাধ হিসেবে দেখে না। অপরাধ করে তো খারাপ । ভাল ছাত্ররা সবার কাছে দেবতা তুল্য। তাদের জন্য সব রকম সুবিধা থাকে।
স্কুলের সকল সুবিধাদি তারা ভোগ করে। বিনা বেতন, বৃত্তি,স্যারের দেয়া নোট, কুইজ ডিবেটিং এ ক্যাপ্টেন্সি, ক্লাশের ক্যাপ্টেন্সি, ক্লাশের পরিচায়ক আরও অনেক কিছু।
তাদের কেউ কেউ ওভার কনফিডেন্স হয়ে পড়ায় লাইনচ্যুত হয়ে যায়। তাদের আমরা আদর করে ঝরে পড়া ছাত্র বলে থাকি।
প্রেম ভালবাসা তাদের জীবনেও আসে। তবে অনেকটা কাচুমাচু হয়ে। তাদের কিছুই করতে হয় না প্রেমই তাদের ধরা দেয়। তারা পড়াশোনার পর ফাঁকা সময়টা প্রেমের পেছনে ব্যায় করে। লাভ ক্ষতির হিসেব করে বেশির ভাগ সময়। ভালোবাসার মধু খায় কিন্তু গায়ে মাখিয়ে নোংরা হয় না। তাই পরীক্ষার সময় ভালবাসার কথা ভুলে থেকে দিনের পর দিন কাটিয়ে দিতে পারে।
তাদের প্রধান অস্ত্র হল মুখস্ত করার ক্ষমতা। এটা যার বেশি সে তত ভাল রেজাল্ট ধারী। এরা প্রথম শ্রেণীর ভাল ছাত্র। তারপর আসে মাথায় রাখা ক্ষমতা। যে যত কম সময়ে কি পড়ছে তা খুটিনাটি সহ বুঝতে পারে তারা দ্বিতীয় শ্রেণীর ভাল ছাত্র।
ভাল ছাত্র হওয়া সম্মানের এবং উপভোগের। যে এই উপভোগের প্রেমে পড়ে নিজেকে সপে দেয় ভাল ছাত্র হবার প্রতিযোগীতায়।
Comments
Post a Comment