Skip to main content

হাতি ঘোড়া গেল তল (গল্প)

অনেক অনেক দিন আগের কথা । এক বনে একটা হাতি ছিল। হাতিটা শান্তশিষ্ট । নিজের মনে চলে সবসময়। বনের এমাথা থেকে ওমাথা ঘুরেঘুরে খায় আর রাতে ঘুমায়।


একদিন বিকেল বেলা মাঠের মাঝে বসে দক্ষিণা বাতাস খাবার সময় একটা পাখিকে দেখল আকাশে উড়ছে আর গান গেয়ে মজা করছে। গানের সুর যেমন সুন্দর , পাখিটা দেখতে তার থেকেও সুন্দর ।


পাখিরা এমনিতেই দেখতে সুন্দর হয় । হাতিটার পাখিকে দেখে ভাল লেগে গেল। হাতিটা পাখিকে জোরে জোরে ডেকে বলল "এই যে ছোট পাখি, তুমিতো খুব সুন্দর উড়তে পারো আর গান গাও!"


পাখিটা উড়তে উড়তে বলল "এ আর এমন কি!"

"তোমার মত এত সুন্দর ভাবে কাউকে উড়তে দেখিনি।"


পাখিটা হাতির মাথার উপর একপাক ঘুরে বলল "ওড়াউড়িতে সুুন্দরের কি আছে?"


"আমার খুব ভাল লাগছে দেখতে।তুমি প্রতিদিন এমাঠে এসো। তোমার ওড়া দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকবো।"


পাখিটা এবার ফুড়ুত করে উড়ে দূরে চলে যেতে যেতে জোরে বলল "পাগল হাতি"।


পাখি এর পরদিন অন্যমাঠে গেল । হাতির কাছে গেল না । তিনদিন পর পাখিটা হাতি যে মাঠে বসে ছিল সে মাঠে এল। এর মাঝে ইচ্ছে করেই সে আসেনি।হাতিটা প্রতিদিন অাসতে বলল আর সে উড়তে উড়তে চলে গেল এটা খারাপ দেখায়। তার একটা মূল্য আছে।


আজ সে উড়ছে আর ভাবছে হাতির সাথে কথা বলবে কি না।

এসময় পাখিটা দেখল হাতি তাকে নিচে ডাকছে। পাখিটা নিচে মাঠের উপর বসল।


হাতি তাকে দেখেই বলল নরম স্বরে বলল "আমি খুব দুঃখিত।"


পাখি খুব অবাক হল!সে আসে নি! দুঃখিত হবার কথা ওর অথচ দুঃখিত হচ্ছে হাতি!


সে হাতিকে জিজ্ঞেস করল "তুমি দুঃখিত! কেন?"


"এই তিন দিন এখানে আসিনি বলে! তুমি নিশ্চই আমার জন্য এসে আবার ফিরে গেছ তাই না। সেদিন ফেরার পর বনের ওদিকটায় ধ্বস হয়েছিল। পথ ছিল না আসার। আজ একটা রাস্তা বের করে আসতে পেরেছি। আমি খুব দুঃখিত। "


"না না ঠিক আছে। আমি কিছু মনে করিনি। বিপদ হতেই পারে।"
পাখি তার না আসার ব্যাপারটা গোপন করে মনে মনে হাসল ।


"এরপর থেকে আর এমন হবে না।"


"বুঝলাম ।"


তারপর আরও কিছু কথাবার্তা হল তাদের। সন্ধ্যের দিকে পাখিটা উড়তে উড়তে চলে গেল। যাবার সময় পাখি ভাবল আসা যায় প্রতিদিন । খারাপ হয় না ।


পাখিটা প্রায় প্রতিদিন আসতে লাগল এরপর থেকে। তাদের খুব বন্ধুত্ব হয়ে গেল। দুজনে সাথে দুজনের সাথে আড্ডা দিয়ে খুব আনন্দ পেতে থাকল । হাতি সকালে, দুপুরে কলাগাছ খায় আর বিকেলে খোলা মাঠে পাখির ওড়াউড়ি দেখে জিরিয়ে নেয়।


এভাবে চলতে চলতে হাতিটা একদিন পাখিকে কাছে ডেকে বলল "পাখি, ও পাখি।"


পাখিটা কাছে এসে বলল "হুম বল ।"


"আমাকে তোমার মত গান গাওয়া শেখাবে ?


"শেখাতে পারি যদি তুমি মন দিয়ে পড়াশুনা কর, তো।"

"সত্যি?"


"হুম সত্যি। "


হাতি জানে তাকে দিয়ে পড়াশুনা হবে না তবু বলল "আচ্ছা, আমি পড়াশুনা করব। "


"এইতো গুড এলিফেন্টের মত কথা।"


এরপর হাতি আর পাখির মাঝে আরও ভাব জমে গেল।


একদিন হাতিটা বলল "তুমি প্রতিদিন এই একটু সময়ের জন্য আসো আবার চলে যাও। চলো আমরা এক হয়ে থাকি। আমরা একসাথে ঘুরব, বেড়াবো আর বিকেলে তুমি উড়বে,গান গাইবে আমি দেখব।"


পাখিটা বলল "হুম ভাল। এসব উল্টাপাল্টা চিন্তা বাদ দাও বুঝছো। "


"থাকো না আমার সাথে? আমি সমস্যাতো দেখছি না!"


"আচ্ছা আমি চেষ্টা করব।"


"চেষ্টা না তুমি থাকবা আমার সাথে আমি কিছু জানি না। "

"আচ্ছা বাবা থাকব-থাকব। তবে এখন না, সময় হোক। "


হাতিটা পাখির মাঝে কি একটা টান অনুভব করল । সে সেদিন রাতে স্বপ্নে দেখল পাখি আর সে মাঠের মাঝে, সে পাখির কোলে মাথা রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে।তার সুড়টা পাখিটা ধরে রেখেছে । চকচকে নীল আকাশ আর তুলোর মত মেঘগুলোর মাঝে একটা বাচ্চা পাতি উড়ছে (পাখি আর হাতির বাচ্চা "পাতি")। নিচে বসে পাখিটা হাতিকে বলছে "ইস আর কত শুয়ে থাকবা? আমার তো পা ব্যাথ্যা হয়ে গেল।"


সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর রাতের স্বপ্নের জন্য খুব ভাল লাগল হাতির।


সেদিন বিকেলে এই স্বপ্নের কথা পাখিকে বলল। পাখি এটা শোনার পর আবার "পাগল একটা" বলে উড়তে লাগল।


এভাবে দিন যেতে যেতে একসময় হাতি আবিষ্কার করল পাখি আর নিয়মিত আসে না।

যেদিন পাখি আসত না হাতির খুব একা একা লাগত। পাখি যেদিন করে আসে না হাতির মন মেজাজ খারাপ থাকে। আর পাখি যেদিন করে আসে মন মেজাজ আরো বেশি খারাপ থাকে। না আসার কারণ নিয়ে পাখির সাথে খুব ঝগড়াঝাঁটি হয় সে দিনগুলোতে ।


হাতি পাখিকে মাঝে মধ্যেই রাগ করে বলে "তোমার আর আসার দরকার নেই এখানে"।


পাখিও উল্টো জবাব দেয় "তুমি আর আগের মত নেই পাল্টে গেছ"।


এবং ঝগড়া শেষে দুজনই প্রচুর আঘাত পেতে থাকে।


এভাবে তাদের ঝগড়া দিনের পর দিন চলতে থাকে। পাখি অবশেষে একসময় হাল ছেড়ে দেয়। হাতি কিছু বললে সে চুপ করে থাকে। ফলে হাতি কিছুক্ষণ রাগটাগ হয়ে বিরাট ভ্যাবাচ্যাকায় পড়ে। আর কিছু বলতে পারে না।


এভাবে একসময় তাদের নিশ্চুপ বোঝাপড়া হয়। সম্পর্ক আগের মত গভীর না হলেও যা হয় তা খুব একটা খারাপ হয় না । হাতি বোঝে তাদের এত ঝড় ঝাপটা, ঝগড়া ঝাটির পরও পাখি তাকে ছেড়ে যায় নি। তাদের সম্পর্ক ঠিক করার পেছনে পাখির অবদান বেশি । পাখির প্রতি সম্মান বেড়ে যায়। পাখির মত একজন কে পেয়ে খুব গর্ব বোধ করতে থাকে।


কিন্তু এ গর্ববোধ বেশি দিন স্থায়ী হল না। কারণ হঠাৎ করে পাখি আসা বন্ধ করে দেয়। কোন রকম আগাম বার্তা ছাড়াই।


হাতির বুঝতে পারে সে পাখিকে না দেখে থাকতে পারছে না। খুব কষ্ট হচ্ছে। সে নাওয়া খাওয়া ভুলে দিনরাত পাখির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তার বিশ্বাস পাখি আসবে। কিন্তু আসে না। অবশেষে সে পাখিকে খুজতে খুজতে এখানে ওখানে ছুটোছুটি শুরু করে। এভাবে খুজতে খুজতে একদিন নদীর ধারে পাখিকে পেয়ে যায়। পাখিকে দেখে হাতি আবেগে কেঁদেই ফেলে।


হাতি হাটু গেড়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে "তুমি আমার কাছে আর আসো না কেন?"


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতি বলে "আমাকে তো তুমি একবার বলতে পারতে?"


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতি বলে "গিরগিটিকে দিয়ে তোমার কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। সেটা পড়েছো?"


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতি বলে "কচ্ছপকে তোমার খবর নিতে তোমার গাছের মগডালের বাসায় পাঠিয়েছিলাম। তুমি দেখা করনি কেন?"


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতি আকুল হয়ে বলে "তুমি কি আর আসবে না আমার কাছে?"


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতি বলে "কোন উপায়ই কি নেই?"


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতি বলে "আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচব না পাখি। "


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতির খুব মনখারাপ হয় । যাই সে জিজ্ঞেস করে পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


এবার মাইক্রোফোন টেষ্ট করা মত পাখিকে টেষ্ট করতে পাখিকে সে বলে "ভেড়ামারায় ছাগল চুরির পেছনে আমেরিকার সিআইএর হাত থাকতে পারে কি?"


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতি বলে "খালেদা জিয়া আর শেখ হাসিনা মিলে দেশের বারো বাজাচ্ছে। কি করা যায় বলত?


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতি বলে "লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিয় এত ভাল অভিনয় করেও যে অস্কার পায় না, সমস্যাটা কোথায়?"


পাখি বলে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতি তারপরও বুঝতে পারে না সমস্যাটা কোথায়।শুধু বুঝতে পারে কিছু বলে লাভ নেই। সে হাল ছেড়ে দেয়। পাখি উড়ে চলে যায়।


হাতি এরপর আরো অগোছালো হয়ে যায়। জীবনের প্রতি আর মায়া খুজে পায় না। যে জীবনে পাখি নেই সে জীবন কি জীবন হল, সে জীবন যেন জি বাংলা।সে জীবন যেন মশারী বিহীন বিছানা, যেন বাংলাদেশ বিহীন ক্রিকেট ম্যাচ, যেন টমেটো ছাড়াই টমেটো সস। তার এ অবস্থা দেখে তার বন্ধুবান্ধবরা এগিয়ে আসে। সবাই মন দিয়ে শোনে হাতির দুঃখগাথা। সবাই সাহায্য করতে চায়। শুধু বেষ্ট ফ্রেন্ড গুলো বাদে।
যেমন সজারুর বক্তব্য হল "ব্রেকআপ হইছে, আল্লাহ তালা বাঁচাইছে।এসব গুনাহের কাজ।পাপ থেকে দূরে সরা উপলক্ষে তোর মিলাদ দেয়া উচিত।"

গন্ডার বলল "ডি জে পার্টি দে দোস্ত।"

ঘোড়া বলল "আমার সাথেও এমন হইছিল । আমি তারপর দিনই সব ভুলে গেছি। এসব বাদ দিয়া পার্টি দে । কে এফ সি যাই ।"

শিয়াল বলল "ওরে পশুর দল,তোরা পার্টি নিয়ে আছিস, হাতির দুঃখটা কেউ বুঝলি না! একটা গেছে, দশটা আসবে।। খুচরা ব্যবসায়ী থেকে পাইকারি হতে হবে। আর বেশি দুঃখ লাগলে বিড়ি টান, মাল টান। একটা হাজারের নোট ফেল আইনা দেই। "

হাতি বুঝল বেষ্ট ফ্রেন্ডরা শুধু ব্যাচেলর পার্টিতে কাজে লাগে, ছ্যাকা খেলে নয়। সবার খালি খাওয়ার চিন্তা।

যারা তাকে সাহায্য করতে চেয়েছিল তাদের সাথে প্লান প্রোগ্রাম করে এবার। পাখিকে তারা মাঝ রাস্তায় আটকাবে। এটা করার আগে একটা দুর্বল মত কাঠবিড়ালি মিনমিন করে বলে "যদি ইভটিজিং কেসে ফাঁসিয়ে দেয়?" তার কথা ধোপে টিকল না। সবার তখন রক্ত যেন ফুটছে।


অবশেষে প্লান মত সবাই মিলে পাখিকে মাঝরাস্তায় আটকাতে পারে ।
হাতি এগিয়ে এসে বলে "এরকম ভাবে আটকানোর জন্য আমি দুঃখিত। এছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। আমি সমাধান চাই । আমি চাই আমরা আবার আগের মত হয়ে যাই।"


পাখি আবার আগের মত বলে ওঠে "আমার বাসায় সমস্যা।"


হাতিটা বলে "তুমি আবার শুরু করলে!"


পাখি বলে "আমার বাসায় ... "


পাশে বুনো মোষ ছিল । পাখির কথা শেষ হবার আগেই বুনো মোষ শিং বাগিয়ে চোখ লাল করে হুশহুশ করে বলল "আর একবার যদি আমার বাসায় সমস্যা কথাটা বলিস তো তোর টুটটুট টুট করে দিব । বজ্জাত পাখি ।"


পাখি আমতা আমতা করে বলল "আমার মামা বাসায় আসছে এখন । সারাদিন আমাকে পাহারা দেয় । আমি কোথায় যাই , কি করি এসব । আমাকে যদি হাতির সাথে দেখে ফেলে আমার বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ হয়ে যাবে । আমিতো আসতেই চাই । আমি কখনই চাই না আমার জন্য হাতি কষ্ট পাক । হাতি তুমিই বল আমি কি তোমাকে কষ্ট দিতে পারি? বল বাবু বল?"


আবেগে হাতির চোখে পানি চলে এসেছে । সে মাথা নাড়িয়ে বলে " না । পারো না। "

পাখি আবার শুরু করে " কিন্তু দেখ তুমি আমার জন্যই কষ্ট পাচ্ছো। আমি খুব খারাপ, খুব বাজে,সবাইকে কষ্ট দিয়ে বেড়াই। বাবু শোনো, তুমি কিউট দেখতে অন্যকোন পাখিকে খুজে নাও ।সে যেন আমার চেয়ে অঅঅনেক ভাল হয়। আমি তোমার যোগ্য না।আমি খুব খারাপ। আমাকে ভুলে যাও।"

হাতি চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল "আমি পৃথিবীর কিচ্ছু চাই না। কিচ্ছু না। শুধু তোমাকে চাই পাখি, শুধু তোমাকে।সত্যি আর কিচ্ছু না। আমরা কি কোন দিন এক হব না পাখি? যদি বাঁচতে হয় একসাথে বাঁচব, মরতে হলে একসাথে মরব।"
(প্রেমে পড়লে হাতিরাও দেখি গাধা হয়ে যায়!)

পাখি বলল "আমিতো চাই। কিন্তু ..."

"কিন্তু কি?"

"তোমার আমার মেলামেশা আমার বাসায় মেনে নেবে না । তুমি যদি একটা কাজ কর তবেই আমাদের মেনে নেবে।"

"কোন চিন্তা কর না পাখি, তোমার জন্য আমি আকাশের চাঁদকে বেলি ড্যান্স দেয়াতে পারি , নদীর স্রোতকে পাঠাতে পারি নাসাতে।"

"এসবের কিছুই করতে হবে না তোমাকে । তোমাকে শুধু..."

"শুধু কি?"

".... উড়তে শিখতে হবে।"
".... উড়তে শিখতে হবে।"
".... উড়তে শিখতে হবে।"
".... উড়তে শিখতে হবে।"
(হিন্দী সিরিয়ালের মত কথাটা তিনবার প্রতিধ্বনিত হবে, অবশ্যই ব্যাকগ্রাউন্ডে বজ্রপাতের সাউন্ড সহ)


পুরো পরিবেশ নিঃস্তব্ধ হয়ে গেল । এমনকি আমিও নিঃস্তব্ধ হয়ে গেলাম। আমার হাত থেমে গেল গল্প লেখা থেকে।

হাতিকে উড়তে হবে! সিরিয়াসলি! গল্পের গরুকে গাছে চড়ানো সম্ভব কিন্তু থলথলে এত্ত মোটা হাতিকে আকাশে ওড়ানো! এওকি গল্পে সম্ভব?


হাতির মুখ ছোট হয়ে এতটুকু হয়ে গেল । হাতির সাথে আসা বন্ধুরা একে অন্যের দিকে তাকাতে লাগল ।


পাখি হাতিকে বলল "তুমি বল, তুমি পারবে । তুমি উড়তে শিখে আমাকে নিয়ে যাবে , বল।"


হাতি মিনমিন করে কিছু বলার চেষ্টা করল কিন্তু কেউই শুনতে পেল না ।


পাখি বলল "আমি জানতাম তুমি পারবে । "



এই ঘটনার পরের তিনদিন হাতি আর নিজের ঘর থেকে বের হল না ।সবাই দুঃচিন্তায়, কি হবে!? তিনদিন পর যখন বের হল , তখন দেখা গেল তিন দিন না ঘুমিনো লাল দুটো চোখ , মাথার সব লোম এলোমেলো।

সে ঠিক করেছে যেভাবেই হোক উড়তে শিখবে । এর জন্য যা কিছু করতে হয় সে করতে রাজি আছে। পাখিকে ছাড়া সে বাঁচবেই না।

এই ঘটনার এক বছর পার হল। পাখিকে পাশের বনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে মিশতে দেখা গেল। অনেকে বলল তাদের নাকি ইয়েও আছে। গুগলে বাঘের সাথে পাখি পার্ট ওয়ান সার্চ দিলেই নাকি ঘ্যাচাং করে চলে আসে।

হাতির সাথে পাখির পুরনো কাহিনী বাঘের কানেও যায়। বাঘ পাখিকে জিজ্ঞেস করে "হাতির সাথে তোমার ঘটনা কি শুনি?"

পাখি বলে "আর বইল না, হাতি একটা বদের হাড্ডি।মাঠের মধ্যে দাঁড়ায় থাকে। পাখি দেখলেই পাখি টিজিং করে। "

বাঘ একটু রাগত স্বরে বলল "আসল ঘটনা কও।"

"আসল ঘটনা কিছুই না। আমিতো হাতিকে চিনতাম না। ভাল ভেবে ফ্রেন্ডশীপ করছিলাম বুঝছো। কে জানতো এমন হবে?"

"কেমন হবে?"

"ও আমাদের ফ্রেন্ডশীপকে সবার কাছে রিলেশন বলে বেড়িয়েছে।তুমি বল এমন গোবদা মার্কা হাতি কি আমার সাথে যায়? আমাকে দেখে মনে হয় তোমার যে আমি হাতির সাথে রিলেশন করতে পারি?"

বাঘ চোখ সরু করে বলে "আমার তো তাই মনে হয়।"

পাখি এমন উত্তর আসা করেনি। নিজেকে সামলে নিয়ে বলল "যাহ দুষ্টু, খুব দুষ্টামি শিখছো আজ কাল। "

বাঘ চোখ টিপ দিয়ে বলল "দুষ্টামি দেখবা, কাছে আসো বেবি।"

যাই হোক। পাখি তার বেষ্ট ফ্রেন্ড ঢোরা সাপকেও সত্যিটা বলেনি। এমনকি আমি, এ গল্পের লেখক, আমি নিজেও ঠিক পাখির ব্যাপারটা বুঝি না। এটুকু অনুমান করতে পারি যে হাতি যে মাঠটায় ছিল সেটায় শস্য দানা,পোকামাকড় সেসময় বেশি ছিল।হাতির কারণে সে নির্বিঘ্নে সেগুলো খেতে পারত সে সময়। কিন্তু ক্ষরায় মাঠের অনেকাংশ শুকিয়ে যায়। তাই পাখি সে মাঠে যাওয়া কমিয়ে দেয়। এদিকে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ওখানে এখন খাদ্যের অভাব নাই।

পুরো ব্যাপারটাই কিন্তু আমি অনুমান বলছি। শিয়র না। পাখির পেটে কি আছে কেউই জানে না।

হাতির দিকে একটু চোখ তুলে তাকাই। এক বছর পেরিয়েছে।বেচারা হাতি এক ইঞ্চিও উড়তে পারে নি।কিন্তু চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছিল। একদিন সে পাখি আর বাঘের সম্পর্কের কথা জানতে পারে। তারপর থেকে হাতি উদাস হয়ে যায়। ঠিকমত কথা বলে না কারো সাথে। খায় না ঘুমায় না। সবাই বুঝল হাতি আর হাতি নেই, হাতি যেন নিঃসঙ্গ নিউট্রন হয়ে গেছে।
( উদাহরণটা না বুঝলে আপনার মাঝে ব্যাপক ঘাপলা আছে। সত্য বলেন ক্লাশ এইটের বিজ্ঞান পরীক্ষায় কার খাতা কপি মারছিলেন? :-P )

হাতিকে একসময় সাদা পান্জাবি আর ঘাড়ে মিনার স্কুল যাওয়া ব্যাগের মত ব্যাগ নিয়ে পথে পথে হাঁটতে দেখা গেল। এ পথ থেকে সে পথ যায় আর খাতায় কি সব যেন লেখে।

একদিন কাঠ বিড়ালি গাছের আড়াল থেকে চুপ করে দেখতে লাগল হাতি কি লিখছে।


পুরো লেখাটা পড়ে কেন জানি কাঠ বিড়ালির চোখ ভিজে আসে। হাতিটা লিখছিল-

"নীল রঙা আকাশে আর তাকাইনা জানো
উড়ে যাওয়া সাদা মেঘ উড়ে যায়
অভিমান জমে জমে জায়গা নেই কোন
তোমাকে ছাড়া দিন চলে যায়।

এ জগতে হল নাতো কি হবে!
আকাশের ছায়াপথে আমাদের দেখা হবে।"

Comments

Popular posts from this blog

Abar ( আবার ) Lyrics - Minar Rahman

Abar ( আবার ) Lyrics - Minar Rahman তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে ?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে ? দেবো না জল আসতে চোখে ,  কোনদিনও আর ,  আর একটি বার দাও যদি জল মোছার অধিকার । তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে ?  আমি তোমার নতুন ভোরের সূর্য হতে চাই ,  আমি আবার তোমার আসার প্রদীপ হতে চাই ।  দেবো না জল আসতে চোখে,  কোনদিনও আর,  আর একটি বার দাও যদি জল মোছার অধিকার ।  তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে?  মুছে ফেলো অভিমানের দাগটি তুমি এবার,  হাসির আলো,  আমায় করো আলোকিত আবার । দেবো না জল আসতে চোখে,  কোনদিনও আর,  আর একটি বার দাও যদি জল মোছার অধিকার।  তুমি কি আমার হাসি সুখের আবার কারন হবে?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে? Song: Abar Singer: Minar Lyrics: Snahashish Ghosh Music: Rezwan Sheikh Cast: Siam & Saira DOP: Suman Sarker Direction: Mahmudur Rahman Hime Asst director team: Emran Robin, Dipto...

Bangladeshi Movie Download Sites (বাংলাদেশী মুভি ডাউনলোড)

NEXTGEN BD - http://180.200.238.22/ Orangebd- orangebd home bd http://103.3.226.206/ Bangla Movie Download Sites new bangla movie Bangladeshi movies

Tamak Pata By Ashes Lyrics ► তামাক পাতা আশেজ লিরিক্স জুনায়েদ ইভান

তুমি তামাক ধরাও তামাক ধরাও আগুন জ্বালিয়ে দাও। আগুন জ্বালালে উড়ে যাবে পাখি মনা আগুন জ্বালালে উড়ে যাবে পাখি। নেশা কেটে গেলে তুমিও কেটে যাবে। জটিল করলে জটিল হবে, সহজ করলে সহজ। মাথার ভিতরে গাঁজা ঘুরে গাঁজার ভিতরে মাথা গাজার ভিতরে মাথা ঘুরে তামাক বৃক্ষের পাতা। তুমি মাঝে মাঝে আমার কাছে কবিতা চাইতা তুমি মাঝে মাঝে আমার কাছে কবিতা চাইতা মনের বিরুদ্ধে কবিতা লিখতাম আমি মনের বিরুদ্ধে কবিতা লিখতাম মনের বিরুদ্ধে কি? কবিতা লেখা যায় রে? জটিল করলে জটিল হবে, সহজ করলে সহজ। মাথার ভিতরে গাঁজা ঘুরে গাঁজার ভিতরে মাথা, গাজার ভিতরে মাথা ঘুরে তামাক বৃক্ষের পাতা। তুমি মাঝেমাঝে তোমার মাঝে আমারে চাইতা! তুমি মাঝেমাঝে আমার মাঝে তোমারে চাইতা! আমি মনের বিরুদ্ধে নিজেরে দিতাম হায় আমি! মনের বিরুদ্ধে নিজেরে দিতাম হায়! মনের বিরুদ্ধে কি? নিজেরে দেয়া যায় রে? জটিল করলে জটিল হবে, সহজ করলে সহজ। মাথার ভিতরে গাঁজা ঘুরে গাঁজার ভিতরে মাথা, গাজার ভিতরে মাথা ঘুরে তামাক বৃক্ষের পাতা। নেশা কেটে গেলে তুমিও কেটে যাবে... tamak pata lyrics in english tamak pata lyrics mp3 tamak pata l...