Skip to main content

আট দিনের একলা বাস ....

(বাসায় আমি আর কয়েকটা ইঁদুরছাড়া কেউ নেই ।মা নানার ওখানে গেছেন ।আমি নাকি বড় হয়েছি এই যুক্তিতে আমাকে বাসা পাহারা দিতে হবে ।একলা বাস করার নতুন কিছু অনুভূতি ,কিছু ঘটনা যা ডাইরি থাকলে লিখতাম)

DAY 1
(1/12/2012)
১.শুক্রবার ,প্রাইভেট নাই , তাই দেরিতে উঠলাম ।উঠার সময় দুপুর ২টা ।
(উঠতে দেরি হবার সম্পূর্ণ দোষ রাজিন শুভর ।আমার কোন দোষ নাই )

২.মা আজকের খাবার মত রান্নাটা করে গেছে তাই রান্নার চিন্তা মাথাই আনতে হয়নি ।

৩.বিকেলে প্রতিবছরের মত এই শীতের ব্যাডমিন্টন খেলার শুভ সূচনা করা হল ।উদ্যোক্তা নির্ঝর ।শুভ সূচনা বলার কারণ নির্ঝরের জুটিকে তিনটা গেম দিছি যার একটা নীলও ছিল ।

৪.কালকের দিন নিয়ে ভাবছি ।খাবার দাবার শেষ ।ভাত রান্না করব ভাবছি ।অবশ্য আগে কোনদিন রান্না করি নাই ।অনেক আগে এক সময় খুব শখ জাগছিল ,তিন চারটা রান্নার বই কিনে একাকার করছিলাম পরে শখ ডিসমিস, দেখি কাল রান্নার বইগুলোর ধুলো ঝাড়ব ।

DAY 2
(2/12/2012)

১.সকালে প্রাইভেট পড়ে এসে "ইংলিস ভিংলিস" দেখলাম ।এসে ভাত রান্না কথা ছিল কিন্তু বন্ধুরা এমন করে ধরল ওদের সাথে ছবি দেখতে বসে গেলাম ।এর আগেও দেখছি একবার ।ভাল ছবি বারবার দেখতে ইচ্ছে করে ।ছবি দেখা শেষ হল দুপুর একটায় ।

২. একা থাকলে সময় কাটে না কথাটা ভুল ।অন্য কারো ক্ষেত্রে জানিনা আমার ক্ষেত্রে কথাটা ১০০% ভূল ।আজ অনেক কিছু করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু ঘরের কাজ করতেই দিনের সাথে রাতও শেষ ।

৩.আজ রান্না করার কথা ছিল ।রান্না ব্যাপারটা আমার কাছে অনেক ইন্টারেস্টিং একটা ইস্যু ।নিজে কি করতে পারি সেটা দেখাই আমার উদ্দেশ্য ।মা আমার খাবার জন্য অনেক রকম ব্যবস্থার কথা বলেছিলেন কিন্তু আমি জেদ ধরে ছিলাম যে নিজে রান্না করে খাব ।আজ করব-করব করতে করতে হলই না ।সমাধান হিসেবে খাবার হোটেলকে বেছে নিয়েছি ।

৪.কালকের ঘটনাগুলোর মাঝে আমার বড় একটা ঘটনা লুকিয়েছি ।কারণটা না বললেও ঘটনার ফলাফল হিসেবে সারাদিন মনটা খারাপ ছিল ।এখনও আছে ।

৫.ভাল খবর দিয়ে শেষ করি ,যদিও সেটা শুধু আমার জন্য প্রযোজ্য ।আজকেও ব্যাডমিন্টনে দু ম্যাচে নির্ঝর-লিমন জুটিকে দুবারই হারিয়েছি ।আমার পার্টনার স্বপন কে থাংকস যদিও সে ফেইসবুকে নাই ।

DAY 3
(3/12/2012)

১.আজকের সেরকম কোন পরিকল্পণা ছিল না যে এটা করব ,সেটা করব ।কিন্তু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাসায় এত কাজ করলাম যা কল্পনাতেও ছিল না ।

২.বাসা ফাঁকা থাকার কারণে আমার কলেজের অনেক বন্ধুর বাসায় এসে একত্রে হই হট্টগোল ,চেঁচামেচি ,আনন্দ করে বাংলাদেশের পুরো খেলা দেখলাম ।জেতার কারণে আনন্দ বেড়ে গেছে বহু গুণে ।

৩.আজ জীবনে প্রথম নিজে নিজে ভাত রান্না করলাম তাও রাইসকুকারে না বাংলার ঐতিহ্য হাড়িতে ।অভয় দেয়ার জন্য পাশে ছিল বন্ধু নির্ঝর ।ভাত রান্নার কথা শুনে নির্ঝর প্রথমে নাক সিটকিয়ে বলল এইটা কোন ব্যাপার হল ।আমি নিজে কত রাধছি (!!!) দে আমি শিখাই দেই ।আমি নির্ঝর কে চালসহ হাড়ি ধরিয়ে দিতে গেলাম ।ও বলল হাড়ি ক্যান রাইসকুকার নাই ,আমিতো রাইসকুকারে সুন্দর ভাত রাধতে পারি ।এই কমেন্টের পর নির্ঝরের পালোয়ানগিরী বোঝা শেষ । আমি ইন্টারনেট ঘেটে ভাত রান্না শুরু করলাম ।পানি শুকিয়ে গেলে আবিষ্কার করলাম পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্রানুযায়ি আমার ভাত ভাত ও চালের সাম্যাবস্থানে অবস্থান করছে ।উপরটা খুব সুন্দর ভাতের মত সাদা হয়েছে কিন্তু খেতে গেলে ভাত যে চাল থেকে উত্‍পন্ন হয় তা মনে করিয়ে দেয় ,মুখের মাঝে কটকট করে ।নির্ঝর ভাত পর্যবেক্ষণ শেষে রায় ঘোষণা দিল ভাত রান্নার আগে পানি কম দেয়ার কারণে আজ এ অকাল অরাজক ভাতের সৃষ্টি হইছে ।আমি গুরুজির তত্ব মেনে নিলাম ।
ভাত অধ্যায়ের এখানে শেষ নয় আরও কিছু বাকি আছে ।এতগুলো ভাতের এ করুন অবস্থার জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিলাম না ।ভাত ও আমার আত্মশুদ্ধির জন্য রাতে ভাত গুলো কে আবার পানি দিয়ে চড়িয়ে দিলাম ।এবার ভাত গুলো মিলেমিশে গণতান্ত্রিক রুপ নিল । পায়েশের মত দেখতে হল ।শুধু স্বাধটা রয়ে গেল ভাতের মতই ।এখানেই আজকের মত ভাত অধ্যায়ের সমাপ্তি ।ওহ্যা ভাঁত রান্নার আগে নুডুলস রান্না করেছিলাম ওটা ভালই হয়েছিল ।

৪.থালাবাসন মাজা ,ঘর-বিছানা ঝাড়ু দেয়া ,কাপড় ধোয়া ,আসবাবপত্র পরিষ্কার করা এইসবরে আমার সামনে যে টুকিটাকি কাজ বলবে সুযোগ পাইলে এক থাবড়া দিয়া কমপক্ষে তার পনেরটা দাঁত ফালাই দিবো ।কাপড় ধুতে গিয়ে সম্ভবত সর্দি কাশি লাগিয়ে ফেলছি ।এখন কিছুক্ষণপর বিরতিহীন ভাবে কাশছি ,কি জ্বালারে আফজাল ।

৫.আজকে ব্যাড মিন্টন খেলায় টানা পাঁচ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর প্রথম হার ।অবশ্য হার ওই একটাই পরের বাকি দুইটায় আবার জিতছি ।

৬.নাটক সিনেমায় অনেকবার নায়ক নায়িকাকে আয়নার সাথে কথা বলতে দেখছি ।আজ একলা বাড়িতে আমি ইকটু ট্রাই দিলাম ।যেটা বুঝলাম আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বকে কিছু বললে বলা কথা গুলো অনেকক্ষণ মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে ,মাথার মাঝে গেথে যায়,কানে ঐ কথা গুলো বারবার শোনা যায় আর মনে হয় আয়নার মানুষটার অঙ্গভঙ্গির সাথে আমার অঙ্গভঙ্গির কোথাও একটা গড়মিল হচ্ছে ,অদ্ভুত ভাবে যা আমি ধরতে পারছি না ।যখনই বের করতে যাচ্ছি মনে হচ্ছে কেউ একজন যেন চুপে চুপে হাসছে অথচ আমি আর আয়নায় আমার প্রতিবিম্ব ছাড়া আশেপাশে কাউকে দেখছি না ।একলা বাসায় বুকে ভয় ধরানোর জন্য এই ব্যাপারটাই যথেষ্ট । ধ্যুত ,ভয় পেলে কি চলবে ?আরো কিছুক্ষণ কথাটথা বলে আয়নার সামনে আসলে আমি অন্যসময় যা করি তাই করা শুরু করলাম ,নানা কায়দায় ভেংচি দেয়া,চোখটেপাটিপি করা সবশেষে দুইপাটির দাঁত পর্যবেক্ষণ ও গননার জন্য নিখিল দাঁতশুমারী ও তাদের স্বাস্থসেবা কার্যক্রম সুষ্ঠ ভাবে পালন করলাম ।

DAY 4
(4/12/2012)

১.সকালের প্রাইভেট পড়া পর্যন্ত ভাল ছিলাম ।তার পর থেকে সারাদিন অসুস্থ অনুভব করছি ।গলার কাশি আর মাথা ধরা বেড়েছে ।এটা কালকে অনেকক্ষণ ভিজে ভিজে কাপড় ধোয়া আর বাসন মাজার জন্য হতে পারে ।এর ফলে এলোমেলো করে সারাদিন কাটাতে হল ।

২.কালকের অনেক ভাত ফ্রিজে ছিল ।ওগুলো রান্নার বই দেখে ভাজতে গিয়ে নষ্ট করে ফেললাম ।হলুদ এত বেশি দিয়েছি যে কালসে হলুদ হয়ে গিয়েছিল ।একটু খেয়ে দেখলাম জঘন্য খেতে ।সব ভাত ফেলে দিতে হল ।খুব কষ্ট লাগছিল সময়টাতে ।বিশেষ করে ওগুলো ফেলে দেয়ার সময়ে ।রান্নার বইটাতে হলুদের কথা লেখা ছিল না কিন্তু আমি দেখি কি হয় করতে গিয়ে এত কিছু হয়ে গেল । যখনই ব্যাপারটা মাথায় আসছে খুব খারাপ লাগছে ।খারাপ লাগাটা সারাদিন থেকে গেছে ।সব সময় ,সব ক্ষেত্রে এর প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া ছিল ।সারাদিনের কোন কিছু করতে আর ভাল লাগছিল না ।সাথে অসুস্থতা খারাপ লাগার মাত্রাটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ।

৩.খারাপের পাশাপাশি ভাল যা হয়েছে তা হল আজকে যে চা বানিয়েছিলাম তা ফার্ষ্ট ক্লাশ হয়েছে ।এর আগে যে দু একবার বানিয়েছিলাম তা মুখে দেয়া যায়নি তার তুলনায় এটা পাঁচ ছ গুন ভাল ছিল ।এখানেও একটা মন খারাপের ব্যাপার আছে প্রথমে বলতে চাইনি এখন মনে হচ্ছে বলি সেটা হচ্ছে চা আমি দুবার করেছি ।প্রথমবার কয়েক যায়গায় বড় বড় ভুলের কারণে চা তৈরির বদলে ফার্মেসীর জটিল কোন রোগের সিরাপ তৈরি করে ফেলেছিলাম ।পরে সব ফেলে নতুন করে আবার তৈরি করলাম ।এবারই আসল সেই ফার্ষ্ট ক্লাশ চা ফলে এটার দুঃখ খানিকটা ঢাকা পড়ে গেল ।

৪.ডিসকভারিতে বেয়ার গ্রিল আরো কে কে জানি একা একা কিভাবে বাঁচতে হয় তা দেখাতে ক্যামেরার সামনে সত্যিকার বিপদে পড়ে এডভেঞ্চার করে দেখান ।কিশোর মন ,তাই এ ব্যাপারে স্বাভাবিক ভাবেই খুব উত্‍সাহ আমার ।আমি সারাদিনরাত একা একা থাকি ভাবলাম ফোনে ক্যামেরাতো আছে ,আমি সেরকম একটা ভিডিও তৈরি করতে দোষ কি ।এটা চা বানানোর আগের ঘটনা ।প্লান করলাম চা বানানোটা সম্পূর্ণ ভিডিও করব ,ধারাভাষ্য দেব,কোনটাতে অনেক প্রটিন আছে ,কোনটার কারণে ডিহাইড্রেসন হয় না ,ফুটন্ত পানিতে চা পাতা দেয়া কতটা ঝুকিপূর্ণ কাজ,বিশ্বে কত মানুষ এই চা করতে গিয়ে মারা গেছে ব্লা ব্লা ব্লা ।তারপরের ঘটনা খুব ছোট ,কামেরা অন হওয়ার সাথে সাথে আমি অফ হয়ে গেলাম ,গলা শুকিয়ে গেল ,বারবার ঢোক গেলা শুরু হল,হার্টবিট বেড়ে গেল,মুখ থেকে কোন কথা বের হল না (হার্টের রুগী হলে এই জায়গায় নির্ঘাত মারা পড়তাম ),আবার হঠাত্‍ একটু কথা বের হয়ে গেলে লজ্জা পেয়ে এক দৌড়ে ভিডিও অফ করে দেই আবার একটু পর নিজেকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে আবার একি কান্ড ঘটাই ।এই মজার ঘটনার আমি একমাত্র সাক্ষী ,ভিডিওতে নিজের কাহিনী দেখে নিজেই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাই ।হাসি শেষে নিজের উপলব্ধিতে বুঝলাম ওরা এমন একটা কাজ করে যা আমার আয়ত্বে নেই তা হল মনে যা আসে তাই বলে ফেলা যা আমি কোন ভাবেই পারছি না ।আমি যদি ওই পরিবেশে ওই পরিস্থিতিতে পড়ি আমিও একই ভাবে চিন্তা ভাবনা করব ,সমাধান খুজে বেড়াব কিন্তু সব চিন্তাগুলোই হবে মনে মনে ,আর ডিসকভারি পুলাপানেরা চ্যাচায়া ,লেকচার দিয়া টিভি মাথায় তোলে । সারাদিনে ভাল মজার ঘটনা এইটাই ।রাতটায় আরো খারাপ কাটলো থাক ওগুলো না বলি ।

DAY 5
(5/12/2012)

১.সকাল ৮টায় ফোনের এলার্মে ঘুম ভাঙল ।৯টায় প্রাইভেট , ১০টায় কলেজ । ভাবলাম সময় আছে আর একটু শুয়ে থাকি ।চোখ বন্ধ করে খুলে দেখি দুপুর ১টা বেজে ১০ মিনিট ।হয়ত স্বপ্ন দেখছি ।আবার চোখ বন্ধ করে খুললাম এবার ১টা বেজে ১১মিনিট ।বাসায় কেউ না থাকায় ডেকে দেয় নি তাই উঠতেও পারিনি ।এখন আর করার কিছু নেই ।আমি এবার শান্তিতে চোখ বুজলাম ।

২.আজকে বাসায় রান্না হয়েছে ডাল , ডিমভাজি ।ডিমভাজি আমি করেছি (এইটা কোন ব্যাপার) ।আমার এক কলেজ ফ্রেন্ড বাসায় তার ফোন চার্জে দিতে এসে ডাল রেঁধে দিয়ে গেছে ,মজাই মজা ।

৩.আজ মা ফোনে মাছ ,মাংস এমনকি পোলাও রান্নারও রেসিপি বলেছে ।এটা এক কান দিয়ে ঢুকে অপর কান দিয়ে বের হয়ে গেছে ।তবে কাল বড় কিছু (বিগহিট) রান্নার ইচ্ছা আছে ।

৪.দেখলাম পরের বার কি খাব ভাবতে ভাবতেই সারাদিন পার করছি ।যার ফলে আমার দিনলিপিতেও খাওয়া দাওয়ার অংশই বেশি এসে যাচ্ছে ।কিন্তু করার কিছু নেই এটাই বাস্তবতা ।

DAY 6
(7/12/2012)

১.একলা থাকায় পরিচিতদের কাছে সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটা শুনতে হচ্ছে সেটা হল একা থাকি কিভাবে ,ভয় করে কিনা ।দুটি প্রশ্নের একটাই উত্তর , মিষ্টি করে রহস্য জনক একটা হাসি ।

২.আজকে রান্না করেছি ভাত আর পিয়াজু ।ভাত একদম পার্ফেক্ট হয়েছে ।আর পিয়াজু বই দেখে রান্না করা ।ভালই হয়েছে ।

৩."কি দরকার আমাকে ফোন দেয়ার ।যথেষ্ঠ হয়েছে ,আমি আর কষ্ট নিয়ে গল্প কবিতা লিখতে চাইনা ।"

৪.
কষ্ট তুমি আলু খাও
কষ্ট এবার বাড়ি যাও
কষ্ট আমি পাচ্ছি ফাও
কষ্ট বাইছে আমার নাও ।

DAY 7
(7/12/2012)

১.আজ অনেক কিছু করার পরিকল্পণা থাকলেও কিছুই হল না ।অথচ যে দিন কোন পরিকল্পণা থাকে না সেদিনি অনেক কাজ করে ফেলি ।

২.নিজের দর্শন , ভাল-খারাপ অনুভূতিগুলো অন্যের মাঝে ছড়ানো ,তাকেও নিজের মত করে ভাবতে দেয়া এই কাজ গুলোই করে থাকে কবি ,সাহিত্যিক চিত্রকর ,সিনেমা পরিচালকরা ।এই কাজটায় যখন তারা সফল হয় তখন তাদের মাঝে অন্যরকম একটা ভাললাগা কাজ করে ।সত্যিকারের অন্যরকম ভাললাগা ।এই ভাললাগা এমনই নেশা যে তিনি তা বারবার করেন ।এতক্ষণ বক্তৃতা দেয়ার কারণ আজ এমনই একটা ভাললাগার অভিগ্যতা পেলাম ।পছন্দের গান শুনছিলাম ।বাসায় কেউ না থাকায় ইচ্ছে মত সাউন্ডে গান শোনার অলিখিত স্বাধীনতা পেয়ে গেছি ।এক বন্ধু সে সময় এল ।আমি রান্নাঘরে তাই বসতে বললাম ।প্রথমে চুপচাপ ,তারপরে বলল "গানগুলা ভালোতো " ,তার কিছুক্ষণ পর গানের সাথে গুনগুনানি ,সবশেষে "দোস্ত পেনড্রাইভটা দে সব গান নিতে হবে "।

৩.আজ খাওয়া দাওয়া সব কালকের সৌজন্যে চালিয়ে নিয়েছি ।

৪.বিকেলে ব্যাডমিন্টন খেলায় চার ম্যাচে একটায় জিতেছি ।প্রতিপক্ষ নির্ঝর ।

৫.উপরে লেখা "বাসায় আমি আর কয়েকটা ইঁদুরছাড়া কেউ নাই " কথাটা আজকের জন্য একটু মডিফাই হয়ে হবে "বাসায় আমি ,আমার বন্ধু নির্ঝর আর কয়েকটা ইঁদুরছাড়া কেউ নাই " ।

DAY 8
(8/12/2012)

১.এলোমেলোএলোমেলোএলোমেলো ।

২.ছুটির দিনটা বাংলাদেশের খেলা দেখে,বিশাল আয়োজন করে ছোট এক বাটি মাংস রান্না আর ফেইসবুকিং করতেই শেষ ।

৩.নিজে নিজে ভাত রান্না করা ,ডিমভাজি করা ,পানি গরম করা পারলেও স্বপ্নছিল গেইল ব্যাটিং এ পারুক আর না পারুক আমি নিজেই একটা বিগ হিট টাইপ রান্না করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেব ।আজ তা পূরণ হল মাংস রান্না করে ।মাংস অবশ্যই একটা বিগহিট রান্না ।মাকে ফোনে যেই বললাম মাংস রান্না করব ,মা প্রথমেই ঘোষনা দিল এটা দুনিয়ার অন্যতম সোজা রান্না (আমার বিগহিট রান্না কে "সোজা" বলে আসা ১ম অপমান),তারপর মাংস রান্নার রেসিপি ,কি করে কি করতে হবে বলল ।তারপর বলল তোর খালা এসছে খালার সাথে কথা বল ,খালার সাথে কথা একটু বলতেই খালা সরাসরি খাবার দাবার বিভাগে চলে এলেন ,আমি বললাম মাংস রান্না করব ,তিনি প্রথমে বললেন এটা খুব সোজা রান্না (২য়),তারপর রেসিপি ,কারিকুরি ইটিসি ।তারপর খালা দিল তার বড় মেয়েকে ,সে পাশেই ছিল ,আমার থেকে তিন চার বছরের বড় ,সে যে কয়টা রান্না পারে সেই লিষ্টে দুর্ভাগ্য ক্রমে মাংস রান্নাটা ছিল ,প্রথম কথাতেই বলল "এত এতবড় হয়েছ অথচ মাংস রান্না পারো না !এটা তো অনেক সহজ (৩য়)।"আমি খোঁচা হজম করে বললাম "না ,আসলেই পারি না ।" তারপর ব্যাপক উত্‍সাহ ও উদ্দিপনা নিয়ে আমাকে আবার সেই রেসিপি ,এটা করে ওটা ,ওটা করে এটা বোঝানো শুরু করল আমি হু হা করে গেলাম । মাংস রান্নার যে বিরাট উত্‍সাহ ছিল তা মাত্র বিশ মিনিট চুয়াল্লিশ সেকেন্ডের মধ্যে দপ করে নিভে গেল ।এটা দুপুরের ঘটনা ।বিকেলে মন মেজাজ খানিক ঠিক হল । এক বন্ধুকে নিয়ে ময়দানে (রান্নাঘরে) নেমে পড়লাম ।অনেক ফোন ,বই ,এক্সপেরিমেন্ট শেষে সফল ।কিন্তু খেতে গিয়ে দেখলাম লবণ বেশিরও একটু বেশি হয়েছে । সমস্যা না ,জীবনে চলতে গেলে সমস্যা নিয়েই চলতে হয় ।

৪.ভাবছি এখন থেকে আর একা থাকা মূলক ডাইরী টাইপ কিছু লিখব না ।মানুষ নতুন কিছু দেখলে চমত্‍কৃত হয় তার সেই চমত্‍কৃত ভাবটা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে কিন্তু সেটা নিয়মিত দেখলে আর সেটায় চমত্‍কার ভাবটা থাকে না ।আমি একা থাকার প্রথম দিকের চমত্‍কার ভাবটা পার করে এসেছি এখন সব দিনই আমার কাছে একই হয়ে যাচ্ছে নতুন করে বলার মত কিছু নাই ।এদিকে আম্মুর ফিরে আসারও কোন নাম গন্ধ নাই ।আজতো একবার বলেই ফেলল পঁচিশ ত্রিশ তারিখের পরে আসতে পারে ।এটা লিখতে এখনই কেমন জানি আতেল আতেল লাগে আরো পনেরো বিশ দিন ক্যারি করা অসম্ভব ।তাই এটাই হয়ত শেষ ।

Comments

Popular posts from this blog

Top 10 Bangladeshi Economist I বাংলাদেশের সেরা ১০ অর্থনীতিবিদ

Wahiduddin Mahmud is Professor of Economics, University of Dhaka. He was Advisor (Minister) for Finance and Planning of the non-party Caretaker Government of Bangladesh in 1996. His recent publications include an edited volume of the International Economic Association titled Adjustment and Beyond: The Reform Experience in South Asia He completed his matriculation from Annada Government High School, Brahmanbaria. Then He moved to Dhaka to study Economics in Dhaka University. He obtained his PhD in economics from Cambridge University.He joined University of Dhaka as a professor of economics. He is a member of International Growth Centre based at London School of Economics. He has held positions at Cambridge University, Oxford University, IDS at Sussex, IFPRI, and the World Bank. He was part of many government committees and commissions in Bangladesh relating to micro-finance, national income, agricultural reforms, PRSP and MDG monitoring. He has also partici...

Abar ( আবার ) Lyrics - Minar Rahman

Abar ( আবার ) Lyrics - Minar Rahman তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে ?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে ? দেবো না জল আসতে চোখে ,  কোনদিনও আর ,  আর একটি বার দাও যদি জল মোছার অধিকার । তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে ?  আমি তোমার নতুন ভোরের সূর্য হতে চাই ,  আমি আবার তোমার আসার প্রদীপ হতে চাই ।  দেবো না জল আসতে চোখে,  কোনদিনও আর,  আর একটি বার দাও যদি জল মোছার অধিকার ।  তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে?  মুছে ফেলো অভিমানের দাগটি তুমি এবার,  হাসির আলো,  আমায় করো আলোকিত আবার । দেবো না জল আসতে চোখে,  কোনদিনও আর,  আর একটি বার দাও যদি জল মোছার অধিকার।  তুমি কি আমার হাসি সুখের আবার কারন হবে?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে? Song: Abar Singer: Minar Lyrics: Snahashish Ghosh Music: Rezwan Sheikh Cast: Siam & Saira DOP: Suman Sarker Direction: Mahmudur Rahman Hime Asst director team: Emran Robin, Dipto...

Bangladeshi Movie Download Sites (বাংলাদেশী মুভি ডাউনলোড)

NEXTGEN BD - http://180.200.238.22/ Orangebd- orangebd home bd http://103.3.226.206/ Bangla Movie Download Sites new bangla movie Bangladeshi movies