বাংলাদেশ
চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের বর্তমান চিত্র
সাত
একরের বেশি জায়গাজুড়ে বাংলাদেশ
চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের শুটিঙ এর জন্য নয়টি
ফ্লোর রয়েছে। মেক অপ রুম
১৪টি।
যার
মধ্যে দুটির ব্যবহার হচ্ছে বর্তমানে। দুটো ডাবিং থিয়েটার
। যেগুলো বন্ধই দেখা গেল। এডিটিং
প্যানেল ডিজিটাল হয়নি এখনো। পুরনো দুটোতে আজকাল কোনও কাজ চলে
না
এফডিসির
ভেতরকার পরিবেশও দিনকে দিন মলিন হয়ে
যাচ্ছে। জরাজীর্ণ ফ্লোর আর টেকিনিক্যাল যন্ত্রপাতির
অভাবে ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে
পরিচালকেরা অনেকটাই এফডিসিবিমুখ হয়ে পড়েছেন। এ
কারণে এখানে চলচ্চিত্রের শুটিং প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তা
ছাড়া উন্নত
প্রযুক্তির আশায় নতুন নির্মাতারা
এখন চলচ্চিত্রের কাজ দেশের বাইরে
করাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ
করছেন। চলচ্চিত্রের বদলে সেখানকার ফ্লোরগুলোতে
নাটক কিংবা বিজ্ঞাপনের শুটিং হচ্ছে। বর্তমানে ছবি মুক্তির সংখ্যাও
কমে গেছে। সেই সঙ্গে ছবির
ব্যবসায়িক সফলতাও নেই খুব একটা।
এর মাঝে দু-একটি
ছবি ব্যবসাসফল হলেও বেশির ভাগই
ব্যর্থ হচ্ছে।
বাংলাদেশ
চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে দূর্নীতি
*
ডিজিটাল
প্রযুক্তি প্রবর্তন’ প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৭৩
লাখ ১৫ হাজার ৭৫৭
টাকা আত্মসাতের প্রচেষ্টার অভিযোগে বিএফডিসির প্রকল্প পরিচালক কাজী মো. শাহ
আলম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কে এম আইয়ুব
আলী এবং ফেইথ ইন্টারন্যাশনাল
লিমিটেডের অংশীদার ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ম্যাগনাটেক
ইলেক্ট্রনিক্স কো আইএনসি এর
স্থানীয় এজেন্ট উজ্জল চক্রবর্তীকে আসামি করে মামলা দায়ের
করে দুদক।
*
পীযূষ
অন্যরা পারফরমেন্স সিকিউরিটি গ্রহণের ক্ষেত্রে পেশাগত দায়-দায়িত্ব পালনে
অবহেলা করেছেন। প্রাক-জাহাজীকরণ পর্যায়ে বিধি অনুসরণ না
করে নিজেদের মনগড়া বিশ্লেণের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্থলে চীনে তৈরি মালামাল
জাহাজীকরণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। মালামাল
গ্রহণ কমিটির সুপারিশ আছে মর্মে মিথ্যা
তথ্য দিয়ে চুক্তি বহির্ভূত
চীনের তৈরি মামামাল গ্রহণ
করে মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে।
ফিল্ম
ডেভলপমেন্ট করপোরেশনের (এফডিসি) ৩ কোটি ৪৬
লাখ ৫৮ হাজার ৫২০
টাকা আত্মসাতের।
দুদকের
উপপরিচালক হামিদুল হাসান গত ২০১৬ সালের
৭ অক্টোবর রাজধানীর তেজগাঁ শিল্পাঞ্চল থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ এবং
১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায়।
তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে
আনিত অভিযোগ চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হলে কমপক্ষে সাত
বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড
ভোগ করতে হতে পারে
এই অভিনেতাকে।
দুদক
কর্মকর্তারা বলছেন, দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারায়
অপরাধ প্রমাণিত হলে সাজা ভোগ
করতে হবে সাত বছরের
জেল। আর ১৯৪৭ সালের
দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায়
অপরাধ প্রমাণিত হলে কারাভোগ করতে
হতে পারে কমপক্ষে ১০
বছর থেকে যাবজ্জীবন।
এই মামলায় পীযূষের সঙ্গে আরো আসামি আছেন,
এক মালয়েশীয় নাগরিকসহ তিনজন। তারা হলেন, পণ্য
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের লোকাল এজেন্টের মালিক খন্দকার শহীদুল, এফডিসির সাবেক প্রকল্প পরিচালক (ক্রয়) শফিকুল ইসলাম এবং মালয়েশিয়ান নাগরিক
জন নোয়েল।
উল্লিখিত
অপরাধ সংগঠিত হয় ২০০৬ থেকে
২০০৭ সালের মধ্যে। যখন পীযূষ বন্দোপাধ্যায়
এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।
ঘটনার
বিবরণে জানা য়ায়, পুরাতন
যন্ত্রপাতি এফডিসিকে গছিয়ে দিয়ে ৪ কোটি
টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ফেইথ ইন্টারন্যাশনাল নামক
একটি প্রতিষ্ঠান। এমন অভিযোগ পাওয়ার
পর গত বছরের ৮
ডিসেম্বর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। অনুসন্ধানের
দায়িত্ব পান উপপরিচালক হামিদুল
হাসান। তিনি প্রথমে অভিযোগের
সত্যতা যাচাইয়ে বিএফডিসির বিভিন্ন নথি সংগ্রহ করেন।
দুদকের
অনুসন্ধানে দেখা যায়, এফডিসি
কর্তৃপক্ষ ২০০৬ সালে ৪
কোটি টাকার ডিজিটাল সাউন্ড টারবো সিস্টেম (ডিটিএস) কেনার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র
আহ্বান করে। সে অনুযায়ী
২০০৭ সালের ৪ এপ্রিল ফেইথ
ইন্টারন্যাশনাল নামের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু
প্রতিষ্ঠানটি নতুন ডিটিএস যন্ত্রপাতির
পরিবর্তে পুরাতন যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে পুরো অর্থ
তুলে নেয়। সেই কমিটির
তদন্তে সরবরাহ করা ডিটিএস যন্ত্রপাতি
পুরাতন বলে শনাক্ত করে
রিপোর্ট দেয়। আর ওই
সময় অভিনেতা পীযূষ বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন।
আর তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন
এ দুর্নীতি সংগঠিত হয়েছিল। এফডিসিতে কাঁচা ফিল্ম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফিল্ম ট্রাস্টের কর্মচারী উজ্জ্বল চক্রবর্তী ফেইথ ইন্টারন্যাশনালের অংশীদার
হিসেবে নেপথ্যে থেকে এ অর্থ
হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ
উঠলে সেসময় এফডিসি কর্তৃপক্ষ এক সদস্য বিশিষ্ট
তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। ডিটিএস
যন্ত্রপাতি পুরাতন বলে শনাক্ত করে
রিপোর্টও দিয়েছিল ওই কমিটি। এরপর
এফডিসি কর্তৃপক্ষ বিষয়টির অধিকতর তদন্তের জন্য দুদকের কাছে
তাদের অভিযোগ পাঠালে দুদকের অনুসন্ধানেও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়।
*
প্রযোজকদের
কাছে যন্ত্রপাতি ব্যবহারের খরচ বাবদ ৩
কোটি ৬৫ লাখ ২৯
হাজার ৬৩৪ টাকা পাওনা
আছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসির)। ৭২জন প্রযোজকদের
কাছে এই টাকা বকেয়া
রয়েছে। সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়ার পর এ ৭২টি
চলচ্চিত্রই পরিচালকরা মুক্তি দিয়েছেন।
Comments
Post a Comment