ঈদের ছুটি শেষ। অখন্ড অবসর কাটিয়ে সবাই কাজে ফিরছে। ক্রুচার কম বয়সী যুবক। পড়াশোনা শেষ করে মহাকাশে মার্ক ২৫ স্পেসশীপের টেকনিশিয়ান পদে চাকরি করছে। ক্রুচার ব্যাগবোঁচকা নিয়ে মোহম্মদপুরের বাড়ি থেকে রওনা দিলো। গন্তব্য মহাখালী ফ্লাই ওভারের পাশের স্পেস স্টান্ড।
সন্ধ্যায় মহাখালী থেকে এয়ার ট্রেন যাত্রীদের মহাকাশে নিয়ে যাবে। ঢাকার রাস্তার কোন ঠিক নেই। ৭১ ঘন্টাও জ্যামে আটকে থাকার অভিজ্ঞতা আছে ক্রুচারের। আগে চাইলে ফুটপাতে হেঁটে অন্তত গন্তব্যে পৌছানো যেত। তার বাবার মুখে ফুটপাতের গল্প সে অনেক শুনেছে। এখন ফুটপাতে জুড়ে প্নেন ভাজ করে রাখা। হাঁটার উপায় নাই। ঢাকার প্রায় প্রতিটা পরিবারেরই নিজস্ব প্লেন আছে। কিছু টাকা হলে ক্রুচারও একটা প্লেন কিনে ফেলবে।
ক্রুচারকে অবাক করে দিয়ে সকালে রওনা দিয়ে বিকেলের দিকেই জ্যাম ঠেলে মহাখালীতে পৌছে যেতে পারল সে। পৌছে যাত্রী বেডে শুয়ে অপেক্ষা শুরু করল। ব্যাপারটা বেশ ভাল যাত্রীদের যাতে অসুবিধে না হয় তাই বালিশ তোষক সহ বিছানার ব্যবস্থা করা দিয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সজিব ওয়াজেদ জয়।
স্পেস ট্রেন ছাড়ার আরো চার দুই ঘন্টা বাকি। শুয়ে শুয়ে নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। হঠাৎ তার ত্রিশিলার কথা মনে পড়ল। বুক থেকে একটা বড় দীর্ঘনিশ্বাস বেরিয়ে এল। ত্রিশিলার কথা ভাবলে এখনও অাফসোস হয়।
ত্রিশিলার কথা ভাবা বাদ দিতে গিয়ে শেলিওনের কথা মনে পড়ল। সবার কথাই কেন জানি আজ মনে পড়ছে। তার প্রথম সংসার ছিল শেলিওন মেয়েটার সাথে। বয়স কম ছিলো তখন। ভার্চুয়াল চারটা বেবিও নিয়ে ফেলেছিল। ক্লাশ শেষ করে এসে বেবির পেছনেই দুজন সময় কাটাতো। তিন মাস সংসার টিকেছিল। তারপর রুক্তিনি মেয়েটার প্রেমে পড়ে ক্রুচার। রুক্তিনির সাথে দু মাস, ক্রেসার সাথে সতেরো দিন, আন্তরিং এর সাথে চার মাস, সান্তানার সাথে তিন মাস, চুলোতাকার সাথে পাঁচ দিন (চুলোতাকা আসলে একটা ক্রচারেরই একটা ছেলে ফ্রেন্ড, মেয়ের ফেক আইডি আর বডি নিয়ে ক্রুচারকে বোকা বানিয়ে বিয়ে করে প্রাঙ্ক ভিডিও বানিয়েছিল, আপন মানুষকে বিশ্বাস করলে যা হয়), তারপর অন্তারিন দু মাস, সব শেষে এই ত্রিশিলা।
মেয়েটাকে প্রায় পটিয়েই ফেলে ছিল ক্রুচার। নিয়মিত ভার্চুয়াল পার্কে নিয়ে ঘুরতো দুজনে। কিন্তু সেই সব কে স্মৃতি বানিয়ে ত্রিশিলা আক্রাচি নামের ছেলেটাকে বিয়ে করল।
ত্রিশিলা মঙ্গলের সেকটর তিনের বাসিন্দা। মঙ্গলে শুধু মাত্র এলিট শ্রেণীর মানুষরাই থাকতে পারে। ত্রুচার ত্রিশিলাকে বিয়ে সরলে সেখানকার সিটিজেনশীপ পেয়ে যেত। অনেক স্বপ্ন বেঁধেছিল মঙ্গলে যাওয়া নিয়ে। এখনও তার অনেক আফসোস হয় বিয়ে টা মিস হয়ে যাওয়ায়।
সে শোয়া ছেড়ে উঠে বসে যাত্রী ছাউনিতে। হাতের স্ক্রিনে বের করলো সেদিনের ভিডিও ফুটেজটা। ত্রিশিলার বাবা আঙ্গুল উঁচিয়ে বলছে "দুই তিন বিটকয়েনের টেকশিয়ান করবে আমার মেয়েকে বিয়ে? কত বড় সাহস বামন হয় মঙ্গলে হাত দিতে চায়? ত্রিশিলার মা শুনে রাখো আজ থেকে ত্রিশিলার ভার্চুয়াল দুনিয়ায় যাওয়া বন্ধ। "
এর কয়দিন পরেই ত্রিশিলার বিয়ের ইনভাইটেশন মেইল আসে। তাতে লেখা "তোমাকেই প্রথত মেইল করলাম।"
ক্রুচার মেইলটা খুটেখুটে দেখেছিল। প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইনার দিয়ে বিয়ের মেইলটা বানানো হয়েছে। তার মঙ্গলে যাবার স্বপ্ন সেখানেই শেষ।
সময় হয়ে আসছে স্পেস ট্রেন ছাড়ার। সব ঝেড়ে ফেলে ট্রেনের সামাে গেল ক্রুচার। যা ভেবেছিল তাই। কোন সিট ফাকা নাই। মানুষে গিজগিজ করছে। যারা সিট পেয়েছে বসে আছে, যারা পায় নি গামছা, লুঙ্গি, দড়ি দিয়ে কিছু না কিছুর সাথে নিজেকে বেঁধে নিচ্ছে। স্পেস ট্রেন ছাড়লে যাতে আটকে থাকে।
সে গামছা বের করল। দরজার একটু দুরে একটা রডে নিজেকে বেঁধে নিল শক্ত করে। একটু পর ঝাঁকি দিয়ে স্পেস ট্রেনটা ছাড়ল মহাকাশের উদ্দেশ্যে। জানালা দিয়ে বাইরেটা দেখা যাচ্ছে। রাত নেমে আসছে পৃথিবীতে, হাজার বছরের পুরোনো রাত।
সন্ধ্যায় মহাখালী থেকে এয়ার ট্রেন যাত্রীদের মহাকাশে নিয়ে যাবে। ঢাকার রাস্তার কোন ঠিক নেই। ৭১ ঘন্টাও জ্যামে আটকে থাকার অভিজ্ঞতা আছে ক্রুচারের। আগে চাইলে ফুটপাতে হেঁটে অন্তত গন্তব্যে পৌছানো যেত। তার বাবার মুখে ফুটপাতের গল্প সে অনেক শুনেছে। এখন ফুটপাতে জুড়ে প্নেন ভাজ করে রাখা। হাঁটার উপায় নাই। ঢাকার প্রায় প্রতিটা পরিবারেরই নিজস্ব প্লেন আছে। কিছু টাকা হলে ক্রুচারও একটা প্লেন কিনে ফেলবে।
ক্রুচারকে অবাক করে দিয়ে সকালে রওনা দিয়ে বিকেলের দিকেই জ্যাম ঠেলে মহাখালীতে পৌছে যেতে পারল সে। পৌছে যাত্রী বেডে শুয়ে অপেক্ষা শুরু করল। ব্যাপারটা বেশ ভাল যাত্রীদের যাতে অসুবিধে না হয় তাই বালিশ তোষক সহ বিছানার ব্যবস্থা করা দিয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সজিব ওয়াজেদ জয়।
স্পেস ট্রেন ছাড়ার আরো চার দুই ঘন্টা বাকি। শুয়ে শুয়ে নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। হঠাৎ তার ত্রিশিলার কথা মনে পড়ল। বুক থেকে একটা বড় দীর্ঘনিশ্বাস বেরিয়ে এল। ত্রিশিলার কথা ভাবলে এখনও অাফসোস হয়।
ত্রিশিলার কথা ভাবা বাদ দিতে গিয়ে শেলিওনের কথা মনে পড়ল। সবার কথাই কেন জানি আজ মনে পড়ছে। তার প্রথম সংসার ছিল শেলিওন মেয়েটার সাথে। বয়স কম ছিলো তখন। ভার্চুয়াল চারটা বেবিও নিয়ে ফেলেছিল। ক্লাশ শেষ করে এসে বেবির পেছনেই দুজন সময় কাটাতো। তিন মাস সংসার টিকেছিল। তারপর রুক্তিনি মেয়েটার প্রেমে পড়ে ক্রুচার। রুক্তিনির সাথে দু মাস, ক্রেসার সাথে সতেরো দিন, আন্তরিং এর সাথে চার মাস, সান্তানার সাথে তিন মাস, চুলোতাকার সাথে পাঁচ দিন (চুলোতাকা আসলে একটা ক্রচারেরই একটা ছেলে ফ্রেন্ড, মেয়ের ফেক আইডি আর বডি নিয়ে ক্রুচারকে বোকা বানিয়ে বিয়ে করে প্রাঙ্ক ভিডিও বানিয়েছিল, আপন মানুষকে বিশ্বাস করলে যা হয়), তারপর অন্তারিন দু মাস, সব শেষে এই ত্রিশিলা।
মেয়েটাকে প্রায় পটিয়েই ফেলে ছিল ক্রুচার। নিয়মিত ভার্চুয়াল পার্কে নিয়ে ঘুরতো দুজনে। কিন্তু সেই সব কে স্মৃতি বানিয়ে ত্রিশিলা আক্রাচি নামের ছেলেটাকে বিয়ে করল।
ত্রিশিলা মঙ্গলের সেকটর তিনের বাসিন্দা। মঙ্গলে শুধু মাত্র এলিট শ্রেণীর মানুষরাই থাকতে পারে। ত্রুচার ত্রিশিলাকে বিয়ে সরলে সেখানকার সিটিজেনশীপ পেয়ে যেত। অনেক স্বপ্ন বেঁধেছিল মঙ্গলে যাওয়া নিয়ে। এখনও তার অনেক আফসোস হয় বিয়ে টা মিস হয়ে যাওয়ায়।
সে শোয়া ছেড়ে উঠে বসে যাত্রী ছাউনিতে। হাতের স্ক্রিনে বের করলো সেদিনের ভিডিও ফুটেজটা। ত্রিশিলার বাবা আঙ্গুল উঁচিয়ে বলছে "দুই তিন বিটকয়েনের টেকশিয়ান করবে আমার মেয়েকে বিয়ে? কত বড় সাহস বামন হয় মঙ্গলে হাত দিতে চায়? ত্রিশিলার মা শুনে রাখো আজ থেকে ত্রিশিলার ভার্চুয়াল দুনিয়ায় যাওয়া বন্ধ। "
এর কয়দিন পরেই ত্রিশিলার বিয়ের ইনভাইটেশন মেইল আসে। তাতে লেখা "তোমাকেই প্রথত মেইল করলাম।"
ক্রুচার মেইলটা খুটেখুটে দেখেছিল। প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইনার দিয়ে বিয়ের মেইলটা বানানো হয়েছে। তার মঙ্গলে যাবার স্বপ্ন সেখানেই শেষ।
সময় হয়ে আসছে স্পেস ট্রেন ছাড়ার। সব ঝেড়ে ফেলে ট্রেনের সামাে গেল ক্রুচার। যা ভেবেছিল তাই। কোন সিট ফাকা নাই। মানুষে গিজগিজ করছে। যারা সিট পেয়েছে বসে আছে, যারা পায় নি গামছা, লুঙ্গি, দড়ি দিয়ে কিছু না কিছুর সাথে নিজেকে বেঁধে নিচ্ছে। স্পেস ট্রেন ছাড়লে যাতে আটকে থাকে।
সে গামছা বের করল। দরজার একটু দুরে একটা রডে নিজেকে বেঁধে নিল শক্ত করে। একটু পর ঝাঁকি দিয়ে স্পেস ট্রেনটা ছাড়ল মহাকাশের উদ্দেশ্যে। জানালা দিয়ে বাইরেটা দেখা যাচ্ছে। রাত নেমে আসছে পৃথিবীতে, হাজার বছরের পুরোনো রাত।
Comments
Post a Comment