Skip to main content

'রিলেশনে শারীরিক সম্পর্ক '

বেশির ভাগ রিলেশন একটু গাড় হলে একটা পর্যায় আসে যখন ছেলেটা চায় রিলেশনটাকে শারীরিক সম্পর্কের দিকে নিয়ে যেতে। সে মেয়েটাকে ফোর্স করে শারীরিক সম্পর্কে হ্যা বলানোর জন্য। এটা ছেলেটা চায় বললে ভুল হবে। সমাজে একটা ধারা প্রচলিত আছে যে শারীরিক সম্পর্ক হলে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দিতে হয় (ধর্মে এবিষয়ে আরো অনেক কিছু আছে, আমার জ্ঞান কম তবে এটা আছে বলে জানি)। এটা পরের কথা। ছেলেদের মাঝে  প্রচলিত আছে শারীরিক সম্পর্ক হলে মেয়েটা তাকে ছেড়ে চলে যেতে পারবে না।
একটু পরিস্কার করে বলি । একটা সম্পর্ক যখন তৈরি হয় মেয়েরা অনেক কেয়ার করে তাদের সম্পর্কের। অনেকটা ঘরের দেয়ালের মত  মেয়েরাই শেপ দেয় তাদের সম্পর্কটা দেখতে কেমন হবে। দিনে কতক্ষণ কথা হবে, কতক্ষণ বসে বসে বাদাম ছিলবে এইসব।সে তুলনায় ছেলেরা সম্পর্কের প্রতি তেমন কেয়ার করে না।কিন্তু তাদের মাথায় অন্য বিষয় ঘোরে যেমন তাদের সম্পর্ক মেনে নেবে কিনা, মেয়েটা তার চেয়ে যোগ্য কাউকে পেলে ছেড়ে চলে যাবে কিনা এমন অনেক কিছু। এসব চিন্তা মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মাথায় বেশি থাকে। মেয়েরা চায় বর্তমানে ছেলেটাকে নিয়ে খুশি থাকতে কিন্তু ছেলেরা চায় ভবিষ্যৎ তে যেন তাকে মেয়েটা একা ফেলে না যায় সেদিকটা নিশ্চিত করতে। এসময় বন্ধুরা ফ্রি ফ্রি এডভাইস নিয়ে হাজির হয়। বলে শারীরিক সম্পর্ক করতে। ছেলেটা তখন মেয়েটাকে একান্তে নেয়ার প্লান আটতে থাকে।
এটা শুনলে হয়ত মনে হবে যেই ছেলেদের মাথায় কুচিন্তা ঘোরে তারাই শুধু এইসব করার কথা ভাবে। যারা সত্যিকারেই ভালবাসে তারা এমন করে না।
ভুল।
আমি এমন ছেলেদের কথা বলছি যারা সত্যিকারই ভালবাসে। মেয়েটার জন্য বাবা মাকে ছাড়তে প্রস্তুত, কষ্ট পেলে হাত কাটতে প্রস্তুত, এমনকি ছেড়ে চলে গেলে আত্মহত্যা করতেও।
যে ছেলে কুচিন্তা নিয়ে ঘোরে তারা কুচিন্তা নিয়ে ঘোরা মেয়েদেরই বেশির ভাগ সময় পায়। কিন্তু ভাল মনের ছেলেদের মেয়েরাই খুজে বের করে।
আসল কথায় আসি। এখন ছেলেরা দ্বিধাবিভক্ত হয়। কারণ রিলেশন মানেই খোলাখুলি কথা। আর বাংলাদেশে রিলেশন হবার প্রথম শর্ত হল শারীরিক সম্পর্ক হবে বিয়ের পর। বেশিরভাগ সম্পর্কের শুরুতে দুজনেই খোলাখুলি ভাবে এসব বলে নেয় যে বিয়ের পর অন্যকিছু তার আগে না। কিছু কনফিউজড থাকে যে শারীরিক সম্পর্কের দিকে টেনে সম্পর্কটাই না ভেঙে যায়। আবার কিছু থাকে যারা প্রতিদিনের কথার মাঝে ধীরে ধীরে অশ্লীলতা টেনে আনে। দুই গ্রুপেই শেষে মেয়েদের সুবিধামত যায়গায় ডেকে আনে কিছু না করার শর্তে। কারণ কোন সুস্থস্বাভাবিক টিপিকাল বাংলাদেশী মেয়ে সরাসরি শারীরিক সম্পর্কের কথা শুনলে ভুলেও রাজি হবে না। এদেশে "লিটনের ফ্লাট" নামে পরিচিত এই ব্যাপারগুলো। মেয়েরা আঁচ করতে পারে কিন্তু  কৌতুলহ আর আবেগ সামলাতে না পেরে এতদিনের সম্পর্কের উপর বিশ্বাস করে  চলে আসে।
মেয়েটাকে একান্তে পাবার পর শুরু হয় রাজি করানোর পালা। এখানে শুরু হয় মাছের বাজারের দরকষাকষি। ছেলেরা হাজার খানেক যুক্তি এনে বলে শারীরিক সম্পর্ক বড় কোন বিষয় না কিন্তু মেয়েরা সব শুনে বুঝে শেষে বলে "না"। কোন কোন ছেলে সরাসরি শারীরিক  অাক্রমণ করে (দিনের পর দিন ধরে দেখা পর্ণ ভিডিও থেকে নেয়া শিক্ষা থেকে)।তবে মজার বিষয় হল যুক্তি হোক বা সরাসরি এখানেও দুই দলই নিষ্ফল হয়। মেয়েরা এত সহজে পরাজিত হতে চায় না। কারণ তাদের মাঝে ছোট থেকে একটা শিক্ষা ঢুকিয়ে দেয়া "মেয়েদের শরীর, মেয়েদের স্বতীত্ব মেয়েদের সবচেয়ে বড় সম্পদ"।
তাই সবশেষে শুধু একটা অস্ত্রই বাকি থাকে ছেলেদের হাতে। তা হল ব্লাকমেইল করা। ছেলেরা সম্পর্ক,বিশ্বাস, ভালবাসা সব কিছু বাজি ধরতে দ্বিধা করে না এই সমটায়। "এই তোমার ভালবাসা! যদি সত্যিই ভালবেসে থাকতে, সত্যিই রিলেশন তোমার কাছে ইম্পর্টেন্ট থাকতো তাহলে রাজি হতে। "এমন আরো কিছু আবেগীয় ব্লাক মেইল। এখানে মেয়েরা দুর্বল হয়ে যায় বেশির ভাগ সময়। এটাই প্রথম এবং বিয়ের আগে এটাই শেষ বলে রাজি হয়। যারা রাজি হয় না তাদের জন্য কিছু ছেলে হাল ছেড়ে দেয কিছু রিলেশন ব্রেকআপের হুমকি দেয়। আজ থেকে রিলেশন শেষ।
যে মেয়েরা এই পর্যায়ে আসে তারা বিরাট একটা ধাক্কা খায়। এতদিন যে ছেলেটাকে পৃথিবীর সবথেকে আপন মানুষ হিসেবে ভাবত তার মন এত কুৎসিত। এতদিন তার দেহ পাবার জন্য এতকিছু করেছিল! ছি! নিজের উপর ঘেন্না আসে।
কিন্তু এদিকে আসলে অন্য ঘটনা ঘটে।
একটা মেয়েকে যখন ভাললাগে তার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করা একটা চ্যালেন্জ। সেই চ্যালেন্জ যদি পূর্ণ হয়তো সেখান থেকে রিলেশনে টেনে নেয়া চ্যালেন্জ হয়ে দাঁড়ায়। রিলেশন করে ফেললে সেটাকে টিকিয়ে রাখা, মেয়েটার থেকে ভালবাসা আদায় করা চ্যালেন্জ হয়ে দাঁড়ায়। এভাবে চলতে থাকে। একসময় এই শারীরিক সম্পর্ক করাও চ্যালেন্জ হয়ে দাঁড়ায়। ছেলেরা ছোট থেকেই হারতে কম শেখে। বিশেষ করে মেয়েদের কাছ থেকে হেরে যাওয়া তো সবচেয়ে নিকৃষ্ট পরাজয় হিসেবে ধরা হয়। তাইমেয়েদের কাছ থেকে মন পাবি কিন্তু দেহ পাবি না শোনার পর সেটা আদায় করতে যা হারাতে হয় হারাক কিন্তু জয় করা চাই ই চাই বলে মাঠে নামে। এজন্য চরিত্রকে সবচেয়ে নিচু দেখাতেও একবারো ভাবে না।
আজব ঘটনা হল এই স্পর্শকাতর বিষয়ের পর কারও ব্রেকআপ হতে শুনিনি। কথা বন্ধ হয়, ঝগড়া হয়, রাগারাগি হয় এবং একসময় ছেলেরা মাফটাফ চেয়ে রিলেশন ঠিক করে নেয়।
এত গেল যারা শারীরিক সম্পর্ক করল না তাদের ঘটনা। কিন্তু যারা শারীরিক সম্পর্ক করল তাদের সম্পর্ক নতুন করে শুরু হয় তারপরের দিন থেকে। এখানেও একটা কথা প্রচলিত আছে।সেটা হল মেয়েদের ভোগ করার পর তাদের উপর আর ইন্টারেষ্ট থাকে না ছেলেদের। কথাটা ভুল ইন্টারেষ্ট থাকে, আগের ভালবাসাও থাকে কিন্তু আগে যে সম্পর্কের প্রতি এগ্রেসিভ ভাব ছিল সেটা থাকে না। শীতল শীতল হয়ে যায়। তখন মেয়েদের মনে হতে থাকে ছেলেটা পাল্টে গেছে। সেদিনের সেই শারীরিক সম্পর্কটাকেই দায়ী মনে করে। নিজের কাছে নিজের শ্রদ্ধা কমে যায়। কাউকে বলতেও পারে না। ফলাফল মেয়েটাও পাল্টে যায়। এই দুজনের পাল্টেযাওয়ায় রিলেশনটাও পাল্টে যায়। যারা ধরতে পারে তাদেরটা টেকে। যারা পারে না তারা একে অন্যের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ব্রেকআপের পথে হাটে। ব্রেকআপের পর মেয়েরা বলে তাকে ইউজ করে ছেড়ে দিয়েছে। তবে শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও সত্যি যে ছেলেরা মেয়েটার হাজার দোষ বললেও শারীরিক সম্পর্কের কথা ভুলেও তোলে না। অথচ একসময় ছেলেটার কাছে শারীরিক সম্পর্কটাকে সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট মনে হচ্ছিল।
কিন্তু বাইরের মানুষ সব শুনে শেষে মেয়েটারই দোষধরে। গল্পে গগল্পেবলে ঠিকি আছে,দেহ দেয়ার সময় মনে ছিল না?, শারীরিক সম্পর্কে রাজি হতে বলেছিল কে?মধু খেয়ে মৌমাছি কি আর বসে থাকবে নাকি?
এই আমাদের সমাজ আর এই আমরা। শারীরিক সম্পর্কের সংস্কৃতি আমাদের না। এটা ইন্ডিয়ারও না। এটা আমেরিকান বা পশ্চিমাদের। ইন্ডিয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশেও ঢুকেছে এটা। ওই দেশে এটা স্বাভাবিক এবং তাদের কোন ক্ষতিও হয় না কারণ তাদের রীতিনীতি গুলো এসবের সাথে একই রেখায় চলে। কিন্তু অপর দিকে আমাদের কিন্তু পুরো আলাদা। পানি গ্লাসে না রেখে টেবিলে ঢেলে দিলে যেমন গড়িয়ে পড়ে তেমন ওদের সংস্কৃতির বিয়ের আগে প্রেম এবং প্রেমের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক দুটোই আমাদের সংস্কৃতিতে গড়িয়ে পড়ে যেতে চায়, আটকে থাকতে চায় না। আশা করি এই লেখা  গড়িয়ে পড়তে দেয়ার আগেই ধরতে সাহায্য করবে। :-)
.
.
>পুরোটাই আমার ধারনা থেকে লেখা। আমার ধারনা ভুল হতে পারে।

Comments

Popular posts from this blog

Abar ( আবার ) Lyrics - Minar Rahman

Abar ( আবার ) Lyrics - Minar Rahman তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে ?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে ? দেবো না জল আসতে চোখে ,  কোনদিনও আর ,  আর একটি বার দাও যদি জল মোছার অধিকার । তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে ?  আমি তোমার নতুন ভোরের সূর্য হতে চাই ,  আমি আবার তোমার আসার প্রদীপ হতে চাই ।  দেবো না জল আসতে চোখে,  কোনদিনও আর,  আর একটি বার দাও যদি জল মোছার অধিকার ।  তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে?  মুছে ফেলো অভিমানের দাগটি তুমি এবার,  হাসির আলো,  আমায় করো আলোকিত আবার । দেবো না জল আসতে চোখে,  কোনদিনও আর,  আর একটি বার দাও যদি জল মোছার অধিকার।  তুমি কি আমার হাসি সুখের আবার কারন হবে?  তুমি কি আমার শত ভুলের আবার বাড়ন হবে? Song: Abar Singer: Minar Lyrics: Snahashish Ghosh Music: Rezwan Sheikh Cast: Siam & Saira DOP: Suman Sarker Direction: Mahmudur Rahman Hime Asst director team: Emran Robin, Dipto...

Bangladeshi Movie Download Sites (বাংলাদেশী মুভি ডাউনলোড)

NEXTGEN BD - http://180.200.238.22/ Orangebd- orangebd home bd http://103.3.226.206/ Bangla Movie Download Sites new bangla movie Bangladeshi movies

এই. রাস্তা গুলো লাগে বড় অচেনা Lyrics [Bangla] | ai rasta gulo lage | দেবী (debi) by ADNAN ASHIF | bangla new song 2018

এই. রাস্তা গুলো লাগে বড় অচেনা. আকাশটার সাথে নাই জানাশোনা... এই. রাস্তা গুলো লাগে বড় অচেনা. আকাশটার সাথে নাই জানাশোনা... আমি তোর. প্রেমেতে অন্ধ  ছিলো চোখ কান সব বন্ধ..... থেমে গেছে জীবনের লেনাদেনা...................... সেই পুরোনো রাস্তাটায়.  আজ একা একা হেটে  যাই  হচ্ছনা হিসাবের বনিবনা...  এখন এমনি করে  ভালো  কেমন করে বাসি অন্য কোনো পাখিকে ।।।।। তার চেয়ে ভালো ছিল তুই নিজ হাতে খুন করে.. যেতি,,,,  আমাকে......... এই দুপুর রোদের ভিড়ে  একটু খিদে পেলে  তোর  নাম্বারটায় ফোনতো আর ঢোকেনা...  তুই তো জানিস  ঠিক  তুই ছাড়া আমার  মুখের অমৃতটাও একা  রোচেনা.....  মাঝরাতে তোর SMS er Tone  আমার গভীর  ঘুম টাকে আর ভাঙ্গায় না ব্যস্ত নগড়ে  আমার বুকের গভীরে  তোর মাথা রাখা মনটাকে রাঙ্গায় না,,,,,  এখন এমনি শত যন্ত্রনা  কেমনি করে বলি  অন্য কোনো সাথীকে,,,,,  তার চেয়ে ভালো ছিল তুই নিজ হাতে খুন করে.. যেতি,,,,  কতনা ভাল হত তু্ই আসতি যদি ফিরে স্বপ্ন দিয়...